প্রতিবন্ধী ব্যক্তি বলতে প্রতিবন্ধী ব্যক্তির অধিকার ও সুরক্ষা আইন ২০১৩ এর ধারা ২ উপধারা (১০) অনুযায়ী যেকোন ধরণের প্রতিবন্ধিতাসম্পন্ন ব্যক্তিকে বুঝাবে। যেমন-
(ক) অটিজম বা অটিজমস্পেকট্রাম ডিজঅর্ডারস (autism or autism spectrum disorder);
(খ) শারীরিক প্রতিবন্ধিতা (physical disability)
(গ) মানসিক অসুস্থতাজনিত প্রতিবন্ধিতা (mental illness leading to disability);
(ঘ) দৃষ্টি প্রতিবন্ধিতা (visual disability);
(ঙ) বাক প্রতিবন্ধিতা (speech disability);
(চ) বুদ্ধি প্রতিবন্ধিতা (intellectual disability);
(ছ) শ্রবণ প্রতিবন্ধিতা (hearing disability);
(জ) শ্রবণ-দৃষ্টি প্রতিবন্ধিতা (deaf-blindness);
(ঝ) সেরিব্রালপালসি (cerebral palsy)
(এ) ডাউন সিনড্রোম (down syndrome);
(ট) বহুমাত্রিক প্রতিবন্ধিতা (multiple disability); এবং
(ঠ) অন্যান্য প্রতিবন্ধিতা (other disability)।
প্রতিবন্ধী জনগোষ্ঠীর সাংবিধানিক অধিকার প্রতিষ্ঠা এবং দরিদ্র, অসহায়, সুবিধাবঞ্চিত প্রতিবন্ধী শিশুকিশোরদের শিক্ষা লাভের সহায়তা হিসেবে ২০০৭-০৮ অর্থ বছর থেকে প্রতিবন্ধী শিক্ষার্থীদের জন্য শিক্ষা উপবৃত্তি কর্মসূচি প্রবর্তন করা হয়েছে। শুরুতে এ কর্মসূচির আওতায় মাসিক উপবৃত্তির হার প্রাথমিক স্তরে ৩০০ টাকা, মাধ্যমিক স্তরে ৪৫০ টাকা, উচ্চ মাধ্যমিক স্তরে ৬০০ টাকা এবং উচ্চতর স্তরে ১০০০ টাকা ছিল। ২০২২-২৩ অর্থ বছরে এক লক্ষ শিক্ষার্থীকে প্রাথমিক স্তরে ৭৫০ টাকা, মাধ্যমিক স্তরে ৮০০ টাকা, উচ্চ মাধ্যমিক স্তরে ৯০০ টাকা এবং উচ্চতর স্তরে ১৩০০ টাকা হারে প্রদান করা হয়েছে ।
বর্তমানে (২০২৩-২০২৪) অর্থ বছরে প্রাথমিক স্তরে ৯০০, মাধ্যমিক স্তরে ৯৫০, উচ্চমাধ্যমিক স্তরে ৯৫০, উচ্চতর স্তরে ১৩০০ টাকা দেওয়া হচ্ছে । বিগত বছরে প্রতিবন্ধী শিক্ষা উপবৃত্তি বিতরণে প্রায় শতভাগ সাফল্য অর্জিত হয়েছে।
সেবার নাম:
প্রতিবন্ধী শিক্ষার্থীদের জন্য শিক্ষা উপবৃত্তি
সেবা প্রদানকারী অফিসের নাম:
উপজেলা সমাজসেবা কার্যালয়, নবীনগর, ব্রাহ্মণবাড়িয়া ।
দায়িত্ব প্রাপ্ত কর্মকর্তা / কর্মচারী:
১. উপজেলা সমাজসেবা অফিসার ও উক্ত কার্যালয়ের সকল কর্মচারী ।
সেবা প্রদান পদ্ধতি (সংক্ষেপে):
জরিপভুক্ত শনাক্তকৃত ও সমাজসেবা অধিদফতর কর্তৃক নিবন্ধিত এবং সরকার কর্তৃকস্বীকৃত শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে অধ্যায়নরত প্রতিবন্ধী শিক্ষার্থী যাদের পারিবারিক বার্ষিক গড় আয় সর্বোচ্চ ৩৬,০০০/- তারা নির্ধারিত ফরমে উপজেলা সমাজসেবা অফিসার, মতলব দক্ষিণ, বরাবরে আবেদন করতে হয়। নীতিমালা অনুসারে যাচাই বাছাই করার পর প্রতিবন্ধী শিক্ষা উপবৃত্তিভোগী নির্বাচন করা হয় । অত:পর নির্বাচিত প্রতিবন্ধী শিক্ষার্থীদের শিক্ষা প্রতিষ্ঠান প্রধান বা অভিভাবককে অবহিত করে বৈধ অভিভাবকের নামে উপবৃত্তির অর্থ উত্তোলনের জন্য মোবাইল ব্যাংকিং হিসাব (MFS নগদ) খোলা হয়। ২০২০-২০২১ অর্থ বছর হতে জিটুপি পদ্ধতিতে উপবৃত্তির টাকা বিতরণ করা হচ্ছে।
কর্মসূচির পরিধি :
ক) সমগ্র বাংলাদেশের বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে অধ্যয়নরত প্রতিবন্ধী শিক্ষার্থীরা “আওতাভুক্ত হবে।
খ) প্রতিবন্ধী শিক্ষার্থীদের জন্য শিক্ষা উপবৃত্তি কর্মসূচির আওতাভূক্ত শিক্ষা প্রতিষ্ঠান :
১.সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয় এর নিয়ন্ত্রণাধীন বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান;
২.সরকারি, রেজিস্টার্ড বেসরকারি ও সরকারি তালিকাভুক্ত বেসরকারি প্রাথমিকবিদ্যালয়;
৩.সরকারি ও বেসরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয়;
৪.সরকারি ও বেসরকারি কলেজ;
৫.সরকার কর্তৃক স্বীকৃতিপ্রাপ্ত সকল মাদ্রাসা;
৬.সরকারি ও সরকার অনুমোদিত চিকিৎসা মহাবিদ্যালয়;
৭.পাবলিক ও সরকার অনুমোদিত বিশ্ববিদ্যালয়;
৮.সরকার অনুমোদিত কারিগরী শিক্ষা প্রতিষ্ঠান;
৯.সরকার কর্তৃক স্বীকৃত বেসরকারি/স্বেচ্ছাসেবী প্রতিষ্ঠান পরিচালিত সকল শ্রেণীর প্রতিবন্ধী শিক্ষা প্রতিষ্ঠান।
উপবৃত্তি প্রাপকের যোগ্যতা ও শর্তাবলী:
১. ‘প্রতিবন্ধী ব্যক্তির অধিকার ও সুরক্ষা আইন ২০১৩’ এর সংজ্ঞা অনুযায়ী প্রতিবন্ধী হতে হবে;
২. বয়স ৫ বছর বা তদুর্ধ্ব হতে হবে;
৩. প্রতিবন্ধী ব্যক্তির অধিকার ও সুরক্ষা আইন ২০১৩ এর ধারা ৩১ অনুযায়ী, প্রতিবন্ধী ব্যক্তি হিসাবে নিবন্ধন ও পরিচয়পত্র গ্রহণ করতে হবে;
৪. প্রতিবন্ধী শিক্ষার্থীদের জন্য শিক্ষা উপবৃত্তি কর্মসূচির আওতাভূক্ত শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে অধ্যয়নরত প্রতিবন্ধী ছাত্র- ছাত্রী হতে হবে;
৫. তালিকাভুক্ত ছাত্রছাত্রীকে ক্লাসে উপস্থিতির হার মাসে কমপক্ষে ৫০% থাকতে হবে;
৬. তালিকাভুক্ত ছাত্রছাত্রীকে নিয়মিত পরীক্ষায় অংশ গ্রহণসহ বার্ষিক পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হতে হবে;
৭. কোন প্রতিবন্ধী ছাত্র-ছাত্রী নতুনভাবে স্কুলে ভর্তি হলে যৌক্তিকতার বিবেচনায় শিথিলযোগ্য; তবে পরবর্তীতে যোগ্যতা অর্জন করতে হবে;
৮. বিদ্যালয়ের সংশ্লিষ্ট ক্যাচমেন্ট এলাকার প্রতিবন্ধী শিক্ষাথী হতে হবে;
উপবৃত্তি প্রাপ্তির অযোগ্যতা :
১. প্রতিবন্ধী সনাক্রকরণ জরিপ কর্মসূচির অন্তর্ভুক্ত না হলে।
২. সরকার কর্তৃক স্বীকৃত শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে অধ্যয়নরত না হলে;
৩. প্রতিবন্ধী ছাত্র-ছাত্রী কোন সরকারি/ বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে চাকুরীরত হলে;
৪. সরকার কর্তৃক প্রদত্ত অন্য কোন ভাতা বা শিক্ষা অধিদপ্তর কর্তৃক প্রদত্ত উপবৃত্তি প্রাপ্ত হলে।
সেবা প্রাপ্তির প্রয়োজনীয় সময়:
নতুন বরাদ্দ প্রাপ্তির ০৩ মাসের মধ্যে ভাতাভোগী নির্বাচন করা হয় ।
নিয়মিত ভাতাভোগীর হিসাবে ০৭ দিনের মধ্যে ভাতা স্থানান্তর করা হয় ।
প্রয়োজনীয় ফি/ট্যাক্স/আনুষঙ্গিক খরচ:
বিনামূল্যে
সংশ্লিষ্ট আইন/বিধি/ নীতিমালা:
প্রতিবন্ধী শিক্ষার্থীদের শিক্ষা উপবৃত্তি বাস্তবায়ন নীতিমালা ২০১৩ (সংযুক্ত)
পরিকল্পনা ও বাস্তবায়নে: মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ, এটুআই, বিসিসি, ডিওআইসিটি ও বেসিস